সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, এবারের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয়। তবে ঐতিহাসিকভাবে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গ্রুপ এটিকে তাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে। এবার আমরা শুধু ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব ব্যবহার করেছি। কারণ ফ্যাসিস্ট কোনো রাজনীতির অংশ নয়, ফ্যাসিস্ট সবচেয়ে বড় অশুভশক্তি। সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নিতে এসে এ কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা ফারুকী বলেন, দেশের সকল জনগোষ্ঠী, সকল ঐতিহ্য- সেই আকবর আমলের ঐতিহ্য, সুলতানি আমলের ঐতিহ্য সবকিছুর মিশ্রণ এখানে দেখবেন। তবে টিপিক্যাল রাজনীতির কিছু এখানে নেই।
১৯৮৯ সালে চারুকলায় আনন্দ শোভাযাত্রা নামে বর্ষবরণ শোভাযাত্রা শুরু হয়েছিল। পরে ১৯৯৬ সালে এটিকে মঙ্গল শোভাযাত্রা নাম দেওয়া হয়। এবার কর্তৃপক্ষ এটিকে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা নাম দিয়েছে।
এ বিষয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, চাপিয়ে দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি, আগে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নাম ছিল বর্ষবরণ শোভাযাত্রা যশোরে। সেখান থেকে ঢাকায় আসার পর নাম হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। এরপর চাপানো হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবার চারুকলা সিদ্ধান্ত নিয়েছে চারুকলায় যে নামে চালু হয়েছিল সে নামে শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, এটা আসলে বাঙালির প্রাণের উৎসব আর নেই, অনেকদিন ধরে এটাকে আমরা বাঙালির প্রাণের উৎসব বানিয়ে রেখেছি। কিন্তু এটা বাংলাদেশের প্রাণের উৎসব। বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারোসহ সকল জাতিগোষ্ঠী বর্ষবরণ পালন করে। ফলে আমরা এটাকে বাংলাদেশের উৎসব হিসেবে পালন করা শুরু করলাম।
তিনি আরও বলেন, যশোরে প্রথমে ‘বর্ষবরণ শোভাযাত্রা’ নাম থাকলেও পরবর্তীতে ঢাকায় এটির নামকরণ করা হয় ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’। এরপর পুনরায় সেটিকে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ করা হয়। এবার চারুকলা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে নামে এটির উৎপত্তি হয়েছিল, তারা সেই পুরোনো নামে ফিরে যাবে।
পরে তিনি যোগ দেন বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায়। ফ্যাসিস্টের মুখাকৃতি ছাড়াও নানান শিল্পকর্মের মাধ্যমে শুরু হয় এ শোভাযাত্রা। এবারের আনন্দ শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য ছিলো ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।